হোম / জাতীয় / রোয়ানুর ধাক্কায় ভাসল উপকূল, কেড়ে নিল ২৪ প্রাণ
roanu

রোয়ানুর ধাক্কায় ভাসল উপকূল, কেড়ে নিল ২৪ প্রাণ

ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুতে উপকূলের সাত জেলায় অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

দ্বিতীয় ক্যাটাগরির এই ঝড়ের প্রভাবে শনিবার ভোর থেকেই ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি ঝরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বাতাসের তীব্রতা। দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রমের সময় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির সঙ্গে দেখা দেয় জলোচ্ছ্বাস, যাতে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এরপরও ঝড়ের দাপট চলে আরও কয়েক ঘণ্টা।

ঝড়ে চট্টগ্রামে জলোচ্ছ্বাস ও গাছ-ঘর ভেঙে মা-ছেলেসহ ১২ জন, নোয়াখালীর হাতিয়ায় জোয়ারে ভেসে মা-মেয়েসহ তিনজন ও ফেনীর সোনাগাজীতে এক রাখাল, কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় চাপা পড়ে ও নৌকার ধাক্কায় তিনজন, পটুয়াখালীর দশমিনায় এক বৃদ্ধা এবং লক্ষ্মীপুর সদরে গাছ উপড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে মৃতের এই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে গত তিন বছরে আঘাত হানা প্রায় একই শক্তির দুই ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ ও ‘মহাসেন’ এ মৃতের সংখ্যাকে। এর কারণ হিসেবে এবার পূর্ণিমায় ভরা জোয়ারের সময় ঝড়ের আঘাতে জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢোকার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছরের জুলাইয়ে প্রায় একই শক্তির ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ এর আঘাতে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। আর ২০১৩ সালের মে মাসে আঘাত হানা একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ এ প্রাণ যায় ১২ জনের।

ঝড়ে পাণহানি ঠেকাতে না পারার পিছনে মানুষের দারিদ্র্যের কথাও বলছেন কেউ কেউ।

রোয়ানু উপকূল পেরিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় আরও অন্তত দুই দিন সারা দেশে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সমুদ্র বন্দরগুলোকে বিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।ঝড় সামনে রেখে আগের দিন বিকাল থেকে নৌযান চলাচলের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল তাতে শিথিলতা এনে শুধু বড় আকারের লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বিকাল থেকে।

ঝড়ে উপকূলীয় এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পেছানো হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা, রোববারের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ২৭ মে।

বঙ্গোপসাগরে গত বুধবার গভীর রাতে সৃষ্ট মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

আবহাওয়াবিদদের দেওয়া তথ্য মতে, প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের এই ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম উপকূলের সন্দ্বীপ, হাতিয়া, কুতুবদিয়া, সীতাকুণ্ড ও ফেনী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসে।

এতে পানিতে ভেসে, গাছচাপায় ও ইট পড়ে নগরীসহ জেলায় নারী-শিশুসহ ১২ জনের ‍মৃত্যু হয়। এর মধ্যে বাঁশখালী উপজেলাতেই জলোচ্ছ্বাসে মারা গেছেন নারীসহ সাতজন।

ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে চট্টগ্রামের চার উপকূলীয় উপজেলা সন্দ্বীপ, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও সীতাকুণ্ডে ১৫০ কোটি টাকার ফসল এবং মৎস্য ও পশুসম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

এছাড়াও দেখুন

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন

দশম জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ...