হোম / জাতীয় / রাজধানীর রামপুরায় টিনশেড ঘর দেবে একই পরিবারের তিনজনসহ নিহত ১১
rampura

রাজধানীর রামপুরায় টিনশেড ঘর দেবে একই পরিবারের তিনজনসহ নিহত ১১

রাজধানীর রামপুরার হাজীপাড়া এলাকায় ঝিলের ওপর মাঁচা বানিয়ে তৈরি করা একটি টিনশেড দোতলা বাড়ি দেবে গিয়ে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঝিলপাড় বউবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে উদ্ধার কাজে থাকা ফায়ার ব্রিগেড সদস্যরা জীবিত অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে বের করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তবে ভেতরে আরও অনেকে আটকা পড়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।

হতাহতের এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন বলে তার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।

হাজীপাড়া নতুন রাস্তার বউ বাজার ও চৌধুরীপাড়ায় মাটির মসজিদ এলাকার মাঝে ওই এলাকা ঝিলপাড় বেগের বাড়ি হিসাবে পরিচিত। ঝিলের কাদা পানির ওপর মাচা করে টিন দিয়ে বানানো ওই দোতলা বাড়িতে যেতে হতো বিশ গজ দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো দিয়ে।

দোতলা ওই টিনশেডে মোট ২২টি ঘরে লোকজন থাকত। দুপুরের পরপর হঠাৎ খুঁটিসহ নিচতলার ঘরগুলো কাদাপানিতে দেবে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে বলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ওসি মো. এনায়েত হোসেন জানান।

ফায়ার সার্ভিসের তিনজন ডুবুরিও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে কাদাপানির ওপরে থাকা খুঁটি কেটে টিন সরানোর চেষ্টা করেন। পরে ক্রেইনের মাধ্যমে হুক লাগিয়ে টেনে উপরের কাঠামো সরানোর চেষ্টা করা হয়।

উপরের কাঠামো সরিয়ে ভেতরে আটকা পড়াদের খুঁজে বের করতে রাত আটটার দিকে রেকার আনা হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোকচিত্রী আসিফ মাহমুদ অভি জানান।

এঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে সাইফুল (১৪), হারুন অর রশীদ (৪৫) ও সাজেদা আক্তার নামে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে রামপুরা থানার এস আই আবদুর রশীদ জানান।

বিকাল পৌনে ৫টার দিকে নিজাম খাঁ (৪৫) ও মিজান (৩৫) নামে দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আর নিজামের স্ত্রী কল্পনা বেগম ও পুত্রবধূ রোকসানা বেগমকে খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদেরও মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

নিহত নিজামের ছেলে সবুজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, তারা ওই টিনশেড বাড়ির নিচ তলায় থাকতেন। দুর্ঘটনার পর এক প্রতিবেশশী তার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আর তার মা ও স্ত্রীকে নেওয়া হয় খিদমাহ হাসপাতালে।

ওই টিনের বাড়ির নিচতলার বাসিন্দা নাসরিন আক্তার জানান, গত মাসে তিনি ও তার স্বামী খোকন ওই বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নেন। আগামী মাসে তাদের অন্য বাসায় চলে যাওয়ার কথা ছিল।

“হাঁটতে গেলেও নড়াচড়া করে। কয়দিন আগেও ঝড়ের সময় খুব ভয় পাইছিলাম। আজকে ঘটনার সময় আমি উঠছিলাম দোতলায়। খোকন, তার বোন রুনা আর ভাই জাকির  ছিল নিচতলায়।”

খোকনকে পরে টিন কেটে বের করা গেলেও জাকির ও রুনার কোনো খোঁজ মেলেনি বলে তিনি জানান। দুর্ঘটনার সময় ওই বাড়িতে অন্তত ৪০ জন ছিলেন। তাদের অর্ধেকেরই এখনো খোঁজ মেলেনি।

গার্মেন্টকর্মী সৈয়দ ইব্রাহীম আলী তার শ্বশুর-শাশুড়ি, স্ত্রী ও তিন শ্যালকের সঙ্গে ওই বাড়ির দোতলায় থাকতেন। ওই বাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

“ঘটনা ঘটছে দুপুরে, খেয়ে দেয়ে অনেকে কাজে যাওয়ার পর। না হলে আরও বহু লোক আজ মারা যেত।”

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান,  মনিরুজ্জামান মনির নামে একজন বছর দুই আগে ওই টিনের ঘর বানিয়ে ভাড়া দেন। তিনিই বাসিন্দাদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করতেন।

এছাড়াও দেখুন

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন

দশম জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ...