হোম / ফটো গ্যালারী / ফলের জুসে সর্বনাশ!
fruits juice

ফলের জুসে সর্বনাশ!

ফলের জুসের প্রতি আগ্রহের কমতি নেই মানুষের। সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি পছন্দের চেহারা পেতে জুস খাচ্ছেন অনেকেই। জুস কি শুধু উপকারই বয়ে আনছে? না, ক্ষতিকর দিকও রয়েছে এর।

বেশি ফলের জুসে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালরি ঢুকছে শরীরে! বাড়ছে ফ্যাট। বাড়িতে তো বটেই, বাইরে বেরোলেও জুসে চুমুক দেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

জিনিউজ বলছে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের ধারণা, ফলের জুস শরীরে গেলে লাভ বেশি। দোকান থেকে কেনা নানারকম জুসের বোতল ঢকঢক করে গলায় ঢালে আরাম করেই। এখানেই বিপদ।

স্মুদি, মিল্কশেইকের অসাধারণ টেস্ট। বাচ্চা থেকে বুড়া, সবাই মজেন এই ধরনের পানীয়তে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফলের জুসে ওজন বাড়ে হু হু করে। কারণ, রসে থাকে বেশি চিনি। ফলের রস থাকে প্রচুর ক্যালরি।

দোকানে তৈরি স্মুদিতে থাকে অতিরিক্ত চিনি, কৃত্রিম রং, ফ্লেভার। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই স্মুদি একদম বাদ।

বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি মিল্কশেইকও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। দুধের সঙ্গে ফল, চিনি, ক্রিম, সিরাপ বা বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভার যোগ করা হয়। ফলে, একগ্লাস মিল্কশেইকে ক্যালরির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০০ থেকে ৪০০ এ।

হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথের গবেষণায় উঠে এসেছে, আপেল, আঙুর, ব্লুবেরি প্রভৃতি ফল টাইপ টু ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু ফল থেকে রস বের করে নিলে ভিটামিনসহ বেশ কিছু উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।

ফলের রসে ২৩ থেকে ৫৪ শতাংশ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট নষ্ট হয়ে যায়। চিনির পরিমাণ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি থাকে।

জিনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফলের রসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। কোনও খাদ্যের শ্বেতসার-শর্করা কত দ্রুত রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়ায়, তার একটি পরিমাপ হল গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। ফলের রসের উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে তা বেশি দ্রুত শরীরে চলে যায়।

কমলালেবু থেকে রস বের করে নিলে তার ফ্লেভনয়েড অনেকটাই কমে যায়। ফলে, ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ হয় না।

রস বের করে নিলে কোনও ফলের ভিটামিন, ফাইবার ও পটাসিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বা শরীরে ফ্যাট কমাতে বেশি বেশি ফলের রস খাওয়ার ধারণাটাই ভুল। ফলের উপকার পেতে জুস নয়, খেতে হবে পুর ফল। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি ‘দ্য ব্রিটিশ ডায়েটেটিক অ্যাসোসিয়েশন’-এর এক গবেষণায় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এতে জানানো হয়, ‘স্থূলতা’ সমস্যা এড়ানোর জন্য আমরা যা খাই, তাই হচ্ছে আমাদের মোটা হওয়ার প্রধান কারণ। অর্থাৎ ফলের জুস, স্মুদি, ড্রাই ফ্রুটস, নিম্ন ক্যালোরির দই, বিস্কুট এসব খাবারই মোটা হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

পুষ্টিবিদ ক্যাথরিন ম্যাথিউস বলেন, “সাধারণত আমরা মনে করি শাক-সবজি বা ফলের জুসে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলস। কিন্তু আমরা ভুলে যাই এতে আরো আছে প্রচুর পরিমাণে চিনি। যার পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেলস-এর থেকে অনেক বেশি।”

তিনি আরো বলেন, “শাক-সবজি এবং ফল-মূলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ‘ফাইবার’। যা আমাদের দেহে চিনির উপস্থিতি বাড়তে দেয় না। কিন্তু যখনই এই শাক-সবজি বা ফলকে জুসে পরিণত করা হয়, এতে থাকা ‘ফাইবার’ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দেহে চিনির উপস্থিতি বেড়ে যায়।”

ক্যাথরিন জানান, শুধু শাক-সবজি বা ফলের জুসই নয়, নিম্ন ক্যালরির দই, বিস্কুট এমনকি হার্টের জন্য ভালো অলিভ অয়েলেও আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। এছাড়াও মধু প্রাকৃতিক চিনির একটি বড় উৎস। যা আমাদের দেহকে মোটা করে তোলে।

‘দ্য ব্রিটিশ ডায়েটেটিক অ্যাসোসিয়েশন’ জানায়, যেখানে ১০০ মিলি কোমল পানীয়তে থাকে ১০.৬ গ্রাম ক্যালোরি, সেখানে ১০০ মিলি ফলের জুসে থাকে ১৫.৭ গ্রাম ক্যালোরি। অর্থাৎ কোমল পানীয়র তুলোনায় জুসে থাকে ৫০% বেশি ক্যালোরি। এছাড়াও প্রতি চামচ অলিভ অয়েলে থাকে ৫০ গ্রাম ক্যালোরি।

পুষ্টিবিদ ক্যাথরিন বলেন, “নিম্ন ক্যালরির দই, বিস্কুট এমনকি দুধেও অতিমাত্রায় ক্যালোরি থাকে। কারণ এ খাবারগুলো থেকে চর্বি সরিয়ে নিলেও স্বাদ বাড়ানোর জন্য বেশি করে চিনি মেশানো হয়।”

এ গবেষণায় আরো জানানো হয়, বেশি সময় ধরে জুস খেলে দাঁতের ‘এনামেল’ নষ্ট হয়ে যায়। স্থূলতা কমানোর জন্য ফলের জুস না খেয়ে পূর্ণাঙ্গ ফল খাওয়া এবং বেশি বেশি পানি পান করা উচিৎ।

এছাড়াও দেখুন

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন

দশম জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ...